‘মা তোমার শরীর ভালো আছে তো? হাঁটুর ব্যাথাটা কীরকম? … শীতকাল বলেই ভয়। বেশি জল ঘেঁটো না … বাবা প্রেসারের ওষুধটা খাচ্ছে তো ঠিকমতো? খেয়াল রেখো … হ্যাঁ হ্যাঁ, দাদার সঙ্গে কথা হয়েছে সকালেই। বুচু, বৌদি সব ভালো … না, অভির ফোন আসেনি, ওনিয়ে চিন্তা কোরোনা। ওখানে টাওয়ার সমস্যা … আমি আবার ফোন করবো … ছাড়ছি তাহলে।’
ফোনটা কেটে দিয়ে সামনে তাকালো শ্রীতমা। রাজডাঙ্গার এই পেয়িং গেস্ট ফ্ল্যাটটার তিনতলার ব্যালকনিটা দিয়ে সামনে খানিকটা ফাঁকা জমি। তবে বেশিদিন থাকবে না। ফ্ল্যাট উঠবে। ইতিমধ্যেই বাউন্ডারি দিয়ে ঘিরতে শুরু করেছে প্রমোটারের লোকজন। বেশ কয়েকটা গাছ আছে জমিটায়। সামনের ডুমুর গাছটায় রোজ কত পাখি আসে। বুনো আগাছার ঝোপে প্রজাপতি ওড়াউড়ি করে। কাঠবেড়ালিদের একটা দঙ্গল তো একেবারে স্থায়ী বাসিন্দা এই গাছটার। মাঝেমাঝে ব্যালকনির রেলিঙের ওপর এসে ছোটাছুটি করে। এটা ওটা খুটে খায়।
রেলিঙের ধারে তার দিয়ে একটা প্লাস্টিকের বাটি বেঁধে দিয়েছে শ্রীতমা। মুড়ি, ছোলা, ভাঙা বিস্কুট দিয়ে রাখে। পাখিরা খায়, কাঠবেড়ালিরা খায়। প্রতি সকালে এটি বড় প্রিয় দৃশ্য শ্রীতমার। এখন রাত। তাই ওরা কেউ নেই। ফ্ল্যাট উঠলে কাটা পড়বে গাছগুলো। ওরা ভিটেছাড়া হবে। ভাবলেই মুচড়ে ওঠে বুকের ভেতরটা। নীচে দোতলায় বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাট থেকে টিভি–র আওয়াজ ভেসে আসছে। একমাত্র বিনোদন বৃদ্ধ দম্পতির। প্রায় সারাদিনই চলে। একমাত্র ছেলে। সেই সুদূর জার্মানিতে। লিপজিগ। বিদেশিনী স্ত্রী। বছরে একবার আসে।
ঠাণ্ডাটা বাড়ছে। গায়ে আলোয়ানটা ভালো করে জড়িয়ে ঘরে ঢুকে এলো শ্রীতমা। কাঁচলাগানো দরজাটা টেনে বন্ধ করে দিলো। পরীক্ষার একগাদা খাতা দেখা বাকি রয়েছে। টেবিলে এসে বসলো। টেনে নিলো একটা বাণ্ডিল। দড়ির গিট খুলে সামনে মেলে ধরলো একটা খাতা। দুচার মিনিট ওপর ওপর চোখ বুলিয়েই বুঝতে পারলো মন বসছে না একদম। একরাশ মন ভারি করা চিন্তা। শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাড়িতে বাবা–মা একা। দাদার রেলের চাকরি। পোস্টিং সেই বিলাসপুর। বহুদিন ধরে। ভাগ্নে বুচু আর বৌদিকে নিয়ে রেলকোয়ার্টারের ছোট্ট দুকামরার ঘর। এদিকে মাসিমা। বাইপাসের ফ্ল্যাটে। অভি নেই। সুতরাং কেয়ার অফ আরতিদি। রিটায়ারমেন্টের বছর দুয়েক বাদে মেসোমশাই চলে গেছিলেন। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে সব শেষ। অভির সঙ্গে তখন সদ্য আলাপ হয়েছে শ্রীতমার। আর অভি … এত করে মানা করলো পই পই করে। শুনলো সে কথা? এটা সেটা ভুজুং ভাজুং দিয়ে ঠিক সেই চলে গেল। আর ওর ওই অফিস, দুনিয়ার যত সব্বোনেশে কাজ – ঠিক ফেলে দেবে ওর কাঁধে। একবার ফিরুক। ফাইনাল হেস্তনেস্ত করতেই হবে একটা। আচ্ছা? এই মুহুর্তে ঠিক কী করছে ও? সব ঠিকঠাক আছে তো? নাঃ, আর চিন্তা করতে সাহসে কুলোচ্ছে না। খাতা ছেড়ে চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়ালো শ্রীতমা। রাতের রান্না করে রেখে গেছে কাজের মাসি। হাতে গড়া রুতি গোটা তিনেক। আলু, বিনস, কুমড়ো, বেগুন আর ব্রকেলির মিক্সড সব্জি। স্যালাড। মাইক্রোওভেন থেকে বের করে নিয়ে এসে টেবিলে বসলো। কোনমতে গোটা দুয়েক রুটি দাঁতে কাটলো। এঁটো থালাবাসন সিঙ্কে নামিয়ে দিয়ে হাতমুখ ধুয়ে জল খেলো বোতল থেকে। টেবিলের ড্রয়ার খুলে ছোট একটা লাল রঙের বাক্স। টুকিটাকি প্রয়োজনীয় ওষুধের। তার মধ্যে একটা অ্যালুমনিয়াম ফয়েল স্ট্রিপ। অ্যালজোলাম ০.৫। ঘুমের ওষুধ। এমনিতে খায় না। তবে আজ দরকার হবে। প্লাস্টিকের এয়ার টাইট আবরন ফাটানোর মৃদু আওয়াজ –‘পুট’। হালকা সবজে রঙের ছোট্ট বড়িটা জিভের কোনে গুঁজে শুয়ে পড়লো কম্বল মুড়ি দিয়ে। বালিশের পাশে শোয়ানো খোলা মোবাইল। যদি রাতবিরেতে ফোন আসে।
কখনও খরবড়ে এবড়ো খেবড়ো অসমান উঁচু নীচু জমি, কখনও ছোট্ট মাঝারি তিরতিরে জলের নালা। কোথাও জল গোড়ালি সমান, কোথাও বা স্রেফ আঙুল ছোঁয়া। স্রেফ অনুভব আর অনুমানের ওপর নির্ভর করে অন্ধকার হাতড়াতে হাতড়াতে এগোচ্ছিলো অভিরূপ। নিজের পাঁচ আঙুল চোখের সামনে এনেও দেখা যাচ্ছে না, এতটাই নিকষ কালো এ আঁধার। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক হলো হেঁটে চলেছে একইভাবে। একটানা। মনে হচ্ছে এ যেন কখনোই একটা শেষ না হওয়া রাস্তার অলীক কিছুর উদ্দেশ্যে অনন্তযাত্রা।
একদম শুরুতেই যখন ঝপ করে অন্ধকার নেমে এলো জঙ্গলে, শেষ আলোটুকুও মুছে গেলো চোখের সামনে থেকে, হড়বড় করে রাকস্যাক হাতড়ে টর্চটা জ্বালাতেই মৃদু অথচ দৃঢ় গলার নির্দেশ – ‘টর্চ বন্ধ কিজিয়ে।’ পরমুহুর্তেই হাতে আরেকটা হাতের স্পর্শ। সে হাতে একটা দড়ি। অভিরূপের হাতে দড়ির আগাটা গুঁজে দিয়ে ফের বেজে উঠেছিলো পথপ্রদর্শকের কণ্ঠস্বর। একইরকম শান্ত, নম্র অথচ কঠিন – ‘চলনা শুরু করনে সে পহলে দোচার বাত ধ্যান সে সুন লিজিয়ে। আপকে সামনে এক সাথি কমরেড খাড়ে হ্যায়। জিসকা কমর মে বান্ধা হুয়া রসসি কা দুসরা তরফ আপকে হাত মে হ্যায়। আপকে ঠিক পিছে হাম অওর দুসরা সাথী কমরেড লাইনকে একদম অন্ত মে … আপকো নজর নেহি আ রহা লেকিন ইস সময় হামলোগ এক স্ট্রেট লাইন পে খাড়ে হ্যায়। তো ডরনেকা বিলকুল কোই কারণ নহি। আপ সির্ফ রসসি কো পাকড়কে চলতে রহিয়েগা। অওর এক বাত। হামারে দো সাথী কমরেড সির্ফ আদিবাসি জুবান ছোড়কে দুসরা কোই ভাষা সমঝতে নহি হায়। মেরা সহায়তা কা ইলাবা আপ উনসে বাত নেহি কর সকতে। খুব প্রয়োজন ছাড়া কথা বলবেন না। বললেও খুব নীচু গলায়। আমি পেছনেই আছি। আগর সিগ্রেট পিনেকা নশা হায় তো জব তক হাম না কহে তো মত পিজিয়েগা। মাচিস ইয়া টর্চ নেহি জালাইয়েগা। বিপদ হতে পারে … তো কমরেড, যাত্রা শুরু করতে হ্যায়।’ এরপর অন্ধকারে দুর্বোধ্য ভাষায় সংক্ষিপ্ত নির্দেশ। যার মধ্যে ‘মার্চ’ কথাটা বুঝতে পেরেছিল অভিরূপ।
তারপর থেকে হেঁটেই চলেছে সমানে। রাতের জঙ্গল জুড়ে কতরকম শব্দ। রাতচরা প্রাণী। ঝিঁ ঝিঁ, ব্যাঙ, পাশ দিয়ে ঝরাপাতা নড়িয়ে কিছুর সড়সড় চলে যাবার শব্দ। বোধহয় সাপ। বাকিগুলো পশু না পাখি, অজানা অভিরূপের কাছে। আচমকাই অন্ধকারে কয়েক জোড়া চোখ! ছোট ছোট টুনি বাল্বের মত জ্বলছে একটু দূরে অন্ধকারে। ভীষণ চমকে উঠে ঘাড় ঘোরালো অভিরূপ। পিছন থেকে মৃদু হাসির আওয়াজ। ‘ঘাবড়াইয়ে মত। হিরণ। চলতে রহিয়ে।” বিস্ময়স্তব্ধ অভিরূপ! হরিণের চোখও জ্বলে রাতের বেলায়! এরকম গভীর জঙ্গলে না এলে এই উপলব্ধি হতো না। এর আগে বেশ কিছু দুর্গম পথে হেঁটেছে। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ট্রেকিংয়ে। সান্দাক্ফু, গোমুখ, পিণ্ডারি গ্লেসিয়ার … কিন্তু সে সব ছিল দিনের বেলা। রাত নামার আগেই ঢুকে পড়া কোন চটি, ক্যাম্প বা বাংলোর নিরাপদ আশ্রয়ে। কিন্তু এভাবে? নিজের হাত নিজে দেখতে না পাওয়া এই ঘোর অন্ধকারে কীভাবে পথ হাঁটছে এরা? এতটা নিশ্চিন্তে, সঠিক, নির্ভুল পদচারনায়। বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না অভিরূপের।
আরও কতক্ষণ হেঁটেছিল জানা নেই। ঘড়ি দেখতেও ইচ্ছে করছিল না। কী লাভ দেখে? অন্ধকারে দৃষ্টিহীন উদভ্রান্ত পথ চলার পরিশ্রম আর ক্লান্তিতে পা দুটো পাথরের মতো ভারি। শরীর থেকে ছিঁড়ে পড়তে চাইছে যেন। এই ঠাণ্ডার মধ্যেও দরদরিয়ে ঘাম গড়াচ্ছে কপাল বেয়ে। তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ। একহাতে ধরা দড়ি। অন্যহাতে যে রাকস্যাকের চেন খুলে জলের বোতলটা বের করে জল খাবে তারও উপায় নেই। এরকম আর কতক্ষণ চলবে জানা নেই। এই অন্ধের মত একটানা পথ চলা … হঠাৎই সামনে ধপধপ করে পা ঠোকার আওয়াজ। পরপর দুবার। সঙ্গে সঙ্গে পিছন থেকে চাপা গলার নির্দেশ – ‘রুখ যাইয়ে কমরেড।’ দাঁড়িয়ে পড়লো অভিরূপ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই টলছে মাতালের মতো। টলমলানিটা সামান্য থামতেই ধপ করে পিঠের রাকস্যাকটা মাটিতে ফেলেই চেন খুলে মিনেরেল ওয়াটারের বোতলটা একঝটকায় বের করেই ঢকঢক করে ঢেলে দিলো গলায়। তখনই ফস করে দেশলাই জ্বালানোর শব্দ। ছোট্ট আলোর ফুলকি। অলৌকিক এক দৃশ্যপট রচিত হলো চারপাশ জুড়ে। হাত দিয়ে চোখ ঢাকলো অভিরূপ। কাঠকুটো জড়ো করে ধরানো হয়েছে আগুন। তেজ খুব একটা বেশি না, তাতেই ঝলসে যাচ্ছে চোখ। খুব ছোটবেলায় সাদাকালো টিভি দেখার একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। পুরোন, জঘন্য প্রিন্টের বাঙলা–হিন্দি সিনেমা। দরজা জানালা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে দেখছে সবাই। বাবার মতে তাতে সিনেমা হল, সিনেমা হল অনুভূতি হয় একটা। প্রতিবার অন্ধকারের দৃশ্যে সত্যিই ঘুটঘুটে অন্ধকার দরজা জানালা বন্ধ উত্তর কোলকাতার ছোট্ট একতলার ঘরে। ফের আলোর দৃশ্য ফিরে এলেই চোখ ধাঁধিয়ে যেতো ভয়ঙ্কর রকম। হুবহু সেই এক অনুভূতি। কিছুক্ষণ সময় লাগতো সেটা কাটতে। এখানেও লাগলো। আলো চোখ সওয়া হয়ে এলে দৃষ্টি গেল হাতকয়েক দুরে। আগুনের সামনে বসা একটা ছেলে। বয়স মেরেকেটে বিশ কি বাইশ। কালো পালিশ করা গায়ের রঙ। জ্বলজ্বলে চোখ দুটো আগুনের আলোয় আরও জলন্ত মনে হচ্ছে। কাঁধের ইনস্যাস অটোম্যাটিকটা একটা পাথরের গায়ে হেলান দিয়ে রাখা। একটা ভাঙা ডাল দিয়ে বারবার খুঁচিয়ে দিচ্ছে আগুনটাকে। মুখে চকচকে হাসি। ‘কমরেড কান্দু’। আলাপ করিয়ে দিলো পথপ্রদর্শক। ‘লাল সালাম কমরেড!’ উচ্চারণের পরমুহুর্তেই মুষ্টিবদ্ধ হাত কাঁধের ওপরে। ‘কমরেড অভিরূপ, কলকত্তা …’। কান্দুর দিকে তাকিয়ে বললো পথপ্রদর্শক। বাকি কথাগুলো দুর্বোধ্যতার কারণে বোধগম্য হলো না। এবার দ্বিতীয়জনের পালা। ‘কমরেড কোশি।’ পথপ্রদর্শকের কথাকে অনুসরণ করে তাকাতেই চমক। একটা মেয়ে! কান্দুরই বয়েসি। ছোট করে ছাঁটা বয়েজ কাট ধরনের চুল। কাঁধে ঝোলানো মেশিন কারবাইন। ফের একপ্রস্থ আলাপ পরিচয়ের পালা। একই কায়দায়। সবশেষে পথপ্রদর্শক। এগিয়ে এলো হাসতে হাসতে। ‘ম্যায় যতীন।’ এরপর করমর্দনের পালা। যতীনের অন্য হাতে একটা দশ লিটারের জেরিক্যান। ‘আইয়ে কমরেড।’ বিনা বাক্যব্যায়ে যতীনকে অনুসরণ করলো অভিরূপ।
শতিনেক মিটার পেরোতেই পাতলা হতে শুরু করলো জঙ্গল। পায়ের নীচে মাটির পরিমান কমে গিয়ে নুড়িপাথরের ভাগ বাড়তে শুরু করেছে। আরও পাঁচ দশ কদম এগোতেই মাঝারি আকারের নদী। সন্ধের থুপথুপে কুয়াশা কেটে আধফালি চকচকে চাঁদ শুয়ে আছে আকাশে। জোছনার আলোয় বয়ে চলা চিকচিকে নদীর জল। ভেসে আসা হাল্কা কলকল শব্দ। আর তারা। থিকথিক করছে আকাশ জুড়ে। যেন বস্তা উপুড় করে মোটা দানার চিনি ছড়িয়ে দিয়েছে কেউ। এত তারা আগে কখনো দেখেনি অভিরূপ একসঙ্গে। নদীর ওপারে ফের ঘন জঙ্গল। একধারে দূরে টিলাপাহাড়। চাঁদের আলোতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। জঙ্গলের শেষপ্রান্তে এসে অভিরূপের দিকে তাকালো যতীন। ‘আপ ইহাঁ ঠ্যাহেরিয়া কমরেড, হাম পানি লেকে আতে হ্যায়।’ নদীর আগে নুড়িপাথর ছাওয়া বেশ খানিকটা খোলা জমি। অন্ততঃ মিটার ত্রিশেক তো হবেই। নিঃশব্দে পেরিয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। কী সর্পিল গতি। পায়ের তলায় নুড়িপাথরের শব্দ উঠছে না এতটুকু। ওর যাওয়ার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়েছিলো অভিরূপ। মনে হচ্ছিল এই হিমমাখা আধোজ্যোৎস্নায় যেন মিলিয়ে যাচ্ছে যতীন। পথশ্রমজনিত স্বেদধারা ইতিমধ্যেই মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে শরীর থেকে। নদীর দিক থেকে ভেসে আসা কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া কামড় বসাতে শুরু করেছে আবার। মা, শ্রীতমা, কোলকাতায় অফিসে সবাই নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তা করছে। আজ সকালের পর থেকে আর একটাও ফোন করতে পারেনি কাউকে। যদিও ওরা জানে সাতদিনের মধ্যে ফোন নাও আসতে পারে তবুও এব্যাপারে একবার কথা বলতে হবে যতীনের সঙ্গে। ফোন না করা গেলেও অন্ততঃ একটা এস এম এস … যেভাবেই হোক। এইসব সাতপাঁচ ভাবনার মাঝখানেই ফিরে এলো যতীন। হাতে জেরিক্যান ভর্তি জল। ‘চলিয়ে কমরেড।’
ফিরতে ফিরতেই যতীনের কাছে বাড়ি আর অফিস খবর পাঠানোর বিষয়টা তুললো অভিরূপ। দু–এক সেকেন্ড চিন্তা করলো যতীন। ‘কাল দোপহরে তক এক জাগা পহুছেঙ্গে। ওহ হামলোগোঁকা ঘাঁটি ইলাকা, মতলব গেরিলা জোন। লিবারেটেড জোন ভি কহে সকতে হায় আপ। উঁহা হামারা রাজ চলতা হায়। জনানতনা সরকার। উঁহা সিগন্যাল মিলতা হায় কভি কভি। উধার যাকে পার্মিশন লেনা হোগা আপকো। পার্মিশন মিলনেসে তব হি আপ ফোন ইয়া মেসেজ কর সকতে হায়। উসকে পহলে নেহি।” গলার নির্দেশের সুর স্পষ্ট। বুঝতে পারলো অভিরূপ।
চলবে…
৩য় পর্বের লিঙ্ক – https://banglalive.com/bengali-novel-ketjel-pakhi-episode-3/
২য় পর্বের লিঙ্ক – https://banglalive.com/bengali-novel-ketjel-pakhi-episode-2/
১ম পর্বের লিঙ্ক – https://banglalive.com/bengali-novel-ketjel-pakhi/
One Response
ছোট ছোট বাক্যে অনবদ্য বিবরণ … সাম্বা ফুটবলের ছোঁয়ায় একের পরে এক দৃষ্টি নন্দন গোল..অভিরূপের সংগে পায়ে পায়ে জন্গলে প্রবেশ…