পুলওয়ামার জঙ্গিহানার পরে, কলকাতায় হুমকির মুখে পড়তে হল এক কাশ্মীরি চিকিৎসককে। গত ২২ বছর ধরে কলকাতায় বসবাস করছেন কাশ্মীরি ওই চিকিৎসক। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর বাঙালি স্ত্রী এবং দুই শিশু। কলকাতারই একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে তাঁর ওই দুই শিশু। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় জঙ্গিহানায় ৪০-এর বেশি সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর গোটা দেশ জুড়েই কাশ্মীরিদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই ঘটনাটি সেগুলির মধ্যে অন্যতম। অভিযোগ, পরপর দু’দিন ওই চিকিৎসককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আর তারপরেই তিনি স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর গত শনিবার সন্ধ্যে থেকে তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশপাহারা বসে।
ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, বাজার এলাকায় আচমকা ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছ-সাতজন যুবক তাঁকে ঘিরে ধরে। তারপর তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, “আপনি পাকিস্তানে চলে যান। এই দেশ আপনার বা আপনাদের নয়। এখানে আপনাদের থাকার কোনও জায়গা নেই। ওটাই আপনাদের দেশ”। পরেরদিন, প্রাতঃভ্রমণে যাওয়ার সময় একটি গাড়ি করে ওই একই দল তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় এবং তাঁকে একই হুমকি দেয়, এমনকী প্রাণনাশের ভয় দেখান বলেও অভিযোগ। তড়িঘড়ি নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন ওই চিকিৎসক।
পুলিশ সূত্রে খবর, কে বা কারা এমন হুমকি দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন গাড়ি করে ওই চিকিৎসককে হুমকি দিতে এসেছিল অভিযুক্তরা, সেটিও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বহু মানুষই ওই চিকিৎসক এবং তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, দীর্ঘ ২২ বছরে এইরকম অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়ে হয়নি তাঁকে। কিন্তু তিনি সেই কলকাতাকেই চেনেন, যেখানে প্রতিবেশীরাই বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তাঁর ধারণা কলকাতার এই ইতিবাচক চরিত্রের কখনওই বদল ঘটবে না।