“ঠিক হ্যায় কমরেড।” নেমে গেলো ছেলেটা।
“আমাকে অ্যাতোক্ষন ধরে এতো প্রশ্ন করলেন। এবার আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি। আশা করি উত্তর দেবেন।” সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হঠাৎই চোখ ঘুরিয়ে অভিরূপের দিকে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিলো অবিনাশ।
“বলুন” ম্লান হাসলো অভিরূপ।
“রাজনৈতিক ভাবে আপনার মত কী ? কোন পথে বিশ্বাস করেন আপনি?” প্রশ্নটা শোনার পর একটু চুপ করে রইল অভিরূপ। তারপর শুরু করল শান্ত গলায়। “আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবার আগে কয়েকটা কথা বলে নিই। আজ অবধি আপনাদের নিয়ে বেশ কিছু লেখা পড়েছি আমি, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা – ম্যাগাজিন আর দেশি বিদেশি পাবলিশিং হাউজের ছাপা বইয়ে। পড়ার পর মনে হয়েছে এদের দুটো ভাগে ভাগ করতে পারি আমি। এক – বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের সাংবাদিক, যাদের অনেকেই আপনাদের বর্ণনা করেছেন জঙ্গল ত্রাস, রক্তপিপাসু আতঙ্কবাদী বা অরন্যদেব, চলমান অশরীরী, রবিনহুডের মতো চোখা চোখা বিশেষণে। দুই – এখানে আপনাদের নিয়ে লিখতে আসা দেশি বিদেশি লেখক লেখিকা, সমাজকর্মীরা। তাদেরকে অনেক ক্ষেত্রেই আপনাদের প্রতি সিমপ্যাথিটিক মনে হয়েছে আমার। ফলে আপনাদের রোমান্টিসাইজড করেছেন ওরা। সেকারনেই আপনাদের ভুল বা দুর্বলতার জায়গাগুলো বিশেষ নজরে পড়েনি ওদের। এই দুধরনের লেখাকেই বেশ একপেশে বা বায়াস বলে মনে হয়েছে আমার। এখানে আসার আগে আমার সম্পাদককে কথা দিয়ে এসেছিলাম, যথাসম্ভব নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করব রিপোর্টটা লেখার সময়। কতটা সফল হব জানি না তবে চেষ্টায় ফাঁক রাখব না এটুকু বলতে পারি। আর বাকি রইল আমার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতামত। এ ব্যাপারে বলা যায়, দো আয়াম নট আ পলিটিকাল পারসন বাট পলিটিকালি কনশাস, অবভিয়াসলি। এদেশেরই সেই অর্ধনগ্ন মহাসন্তের কথাটা আজও মহামূল্যবান আমার কাছে। মোস্ট প্রেসিয়াস। ‘চোখের বদলে চোখ’ – এই খেলাটা যদি চলতেই থাকে তাহলে গোটা একটা দেশ বা জাতি একদিন অন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য।’
কথাটা শেষ হওয়া মাত্র হো হো করে হেসে উঠলো অবিনাশ। নির্জন হাভেলীতে প্রতিধ্বনি তোলা গমগমে সে হাসির শব্দে সিলিঙ থেকে ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে গেল কটা গোলাপায়রা। “এতক্ষণে পরিস্কার হলো ব্যাপারটা। বেকার তর্কাতর্কি আর সওয়াল জবাবের কূটকচালি। আসলে আমি আর আপনি অনেকটা ওই রেললাইনের দুটো ষ্টীল প্লেটের মতো। একই ট্রাক ধরে পাশাপাশি চলে গেছে মাইলের পর মাইল। কিন্তু কখনই এক জায়গায় এসে মেলেনি। চলুন, ওদিকে আবার খাওয়ার লাইন পড়ে গ্যাছে। খেয়েদেয়ে যতটা সম্ভব রেস্ট নিয়ে নিন। কাল কাকভোরে উঠে রওয়ানা দেবো আমরা। আপনাকে সেফ জোনে পৌঁছে দিয়ে তবে দায়িত্ব শেষ আমাদের … চলুন, চলুন।” তাড়া লাগালো অবিনাশ।
রাত দশটা। কোবরা ব্যাটেলিয়ান হেডকোয়াটারের হলঘর। একটা নিচু মঞ্চের ওপর দাঁড়ানো রণজিৎ সিং রাঠোর। পিছনে দেয়ালে ঝোলানো বিশাল একটা ব্ল্যাকবোর্ড। চকে আঁকা ম্যাপ। রাঠোরের সামনে দাঁড়ানো সঞ্জীব পাঠক, আরও দুজন উচ্চপদস্থ অফিসার। পিছনে লাইন দিয়ে দাঁড়ানো জাঙ্গল কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান। বগলে ঝোলানো হোলস্টারে পিস্তল। কাঁধে সেল্ফ লোডিং রাইফেল, লাইট মেশিনগান। “বয়েজ!” ম্যাপের নির্দিষ্ট একটা জায়গায় পয়েন্টিং স্টিকটা রেখে ঘুরে তাকালেন রাঠোর “ইয়ে হ্যায় তিনিপাহাড়। আমাদের ইনফর্মেশন বলছে কাল বিকেল চারটে সাড়ে চারটে নাগাদ জায়গাটা পার হবে ওরা। সঞ্জীব!” উত্তেজনায় ভাটার মতো জ্বলছে ব্যাটেলিয়ান কমান্ডান্টের চোখদুটো। “টেল আওয়ার বয়েজ টু ক্র্যাক দোজ ব্যান্ডিটস অ্যাজ মেনি অ্যাজ পসিবল … নো মার্সি। বাকি যো হোগা হাম সামাহাল লেঙ্গে। স্পেশালি অবিনাশ, দ্যাট ওয়ান আইড স্লাই ফক্স … ইসবার বাঁচকে নেহি নিকালনা চাহিয়ে। হারি আপ। সি আর পি এফ অওর পোলিস ফোর্স পহলেহি রওয়ানা হো গিয়া তিনিপাহাড়কে লিয়ে। নাউ ইউ বয়েজ, রাশ!” হুমকে উঠলেন রাঠোর।
“ইয়েস স্যার!” খাড়া স্যালুট ঠুকে সগর্জনে প্রত্যুত্তর দিলো কমান্ডো বাহিনী।
ভোর সাড়ে পাঁচটা। ঘরির অ্যালার্ম শুনে বিছানা ছাড়ল অভিরূপ। ঝাড়খণ্ডের শীতরাত্রি তখনও চেপে বসে রয়েছে জঙ্গলের ওপর। সঙ্গে থুপথুপে কুয়াশা। অন্ধকার আর ধোঁয়াশায় অস্পষ্ট চারপাশ। দুচারটে লম্ফর টিমটিমে আলো। আবছা চোখে পড়ছিল ধূসর সব ছায়ামূর্তি। বন্দুক কাঁধে তুলে নিচ্ছে। প্লাস্টিক শিট গোটাচ্ছে। তাঁবুর দড়ি খুলছে। একটু দুরে কাঠকুটোর আগুন জ্বালিয়ে চা ফোটানো হচ্ছে। একটু একটু করে চোখে সয়ে আসছে সব। খেয়াল পড়লো এই ক’দিনে সেই নাচের ফটো ছাড়া আর ছবি তোলা হয়নি। খাপ থেকে ক্যামেরাটা বের করতেই সামনে একজন। “কিসিকা মুহ কা ফোটো মত খিচিয়েগা। ব্যাকসাইড সে তসবির লে সকতে হ্যায়। এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে পনেরো কুড়িটা স্ন্যাপ নিলো। বার বার অতনুর কথা মনে পড়ছিল। অফিসের ফটোগ্রাফার। ও থাকলে কাজটা আরও কত ভালো হতো। কিন্তু উপায় নেই। হাজার চেষ্টা করেও একজনের বেশি অনুমতি পাওয়া যায়নি। অগত্যা ইউনিভারসিটিতে সেই ফটোগ্রাফি কোর্সই ভরসা। যতক্ষণ ছবি তুলল ওর পিছনে আঠার মতো লেগে রইল ছেলেটা। প্রতিটা স্ন্যাপের ওপর নজর রাখছিল পিছন থেকে, তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে। ফটো তোলা শেষ করে ক্যামেরা খাপে ঢোকানোর পর তবেই জায়গা ছাড়লো নির্দেশদাতা।
একটু একটু করে অন্ধকার কেটে গিয়ে ফুটে ওঠা ফিকে আলো। হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা। কেবলমাত্র ওর জন্যই একটা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে আর বাকি সবাই এই ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডায় বাইরে শুয়েছে ভাবতেই প্রচণ্ড অস্বস্তি হলো অভিরূপের। ওরা তো এরকম জীবনেই অভ্যস্ত, এরকম স্তোকবাক্যে মনকে প্রবোধ দেওয়া সত্ত্বেও অস্বস্তিটা কাটল না পুরোপুরি। “লাল সালাম কমরেড” সামনে একগাল হাসি নিয়ে জিতন। সেদিনের নাচের দলের ছেলেটা। ওর দ্বিতীয় গাইড টিমের একজন। হাতে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। চুমুক দিতেই উষ্ণ তৃপ্তির আমেজ খেলে গেল গোটা শরীরে। চা দিয়ে জিতন চলে যেতেই লম্বা লম্বা পা ফেলে সামনে এসে দাঁড়ালো অবিনাশ। সঙ্গে ডঃ শশী। “লাল সালাম কমরেড। রাতে ভালো ঘুম হয়েছিলো তো? আজ তো আবার সেই লম্বা হাঁটা। খুব ধকল যাবে আপনার।” অভিরূপ খেয়াল করছিল অদ্ভুত তরতাজা দেখাচ্ছে মানুষটাকে। মুখে বলেও ফেললো কথাটা – “আপনাকে খুব ফ্রেশ লাগছে আজ। হাসলো অবিনাশ – “হ্যাঁ, আসলে ভোর ভোর উঠে চান সেরে নিলাম। সবাই ঠিকঠাক জেগে ওঠার আগেই। অনেকক্ষণ ধরে সাঁতার কাটলাম ঝরনার পুকুরে।”
“ম-মানে!” শোনামাত্র আঁতকে উঠলো অভিরূপ। “এই অ্যাতো ভোরে। এরকম মারাত্মক ঠাণ্ডায়!”
“ও অভ্যেস আছে আমার। এরকম সুযোগ তো পাই না সব সময়। তবে পেলে ছাড়ি না কখনোই। সকাল সকাল চান করে নেওয়া মানে পুরো একটা দিনের জন্য আপনি তৈরি।” পাশে দাঁড়িয়ে হাসছিলেন শশীও – “আপনার মতো আমিও চমকে গেছিলাম যখন প্রথম প্রথম আসি এখানে। ইভন লোকাল ট্রাইবালস অলসো ডোন্ট ডেয়ার টু ডু ইট … কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার। কখনও ওকে সামান্য জ্বরেও পড়তে দেখিনি এতদিনে।” কথাগুলো বলে অবিনাশের দিকে তাকালেন শশী। “আমি আসি কমরেড। মেডিক্যাল কিটস গুছিয়ে নিই গিয়ে।” চলে গেলেন ডাক্তার।
“তাহলে আপনিও রেডি হয়ে নিন। নাস্তার পরেই মার্চ শুরু হবে। আমিও আসি।” কথাগুলো বলে ঘোরার মুখে অবিনাশকে থামালো অভিরূপ – “শেষ একটা প্রশ্ন করব কমরেড? যদি কিছু মনে না করেন। অবিনাশ কি আপনার আসল নাম?” অভিরূপের চোখে তাকিয়ে ফের একবার সেই ঝকঝকে দাঁতের হাসিটা হাসলো অবিনাশ, “আপনি তো অভিজ্ঞ মানুষ। রাজনৈতিক পড়াশুনোও রয়েছে। নিশ্চয়ই জানেন লেনিন, স্তালিন, চে, শশাঙ্ক … এগুলো কোনটাই ওদের আসল নাম নয়। গোপনীয়তার কারনেই এধরনের ‘টেকনেম’ নিতে হয় পার্টিতে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আর কী লাভ জেনে? ধরে নিন না বেলগাছিয়ার বস্তি, মা, বন্ধুবান্ধব, নর্থ ক্যালকাটার গলিগলতা, ফুটবল ম্যাচ, টকি শো হাউস – মিত্রা – দর্পণার লাইনের সঙ্গে ওটাকেও ফেলে রেখে এসেছি।” বলেই দ্রুত মুখ ঘুরিয়ে চলে গেল লম্বা লম্বা পা ফেলে।
সকাল থেকে সূর্য উঁকি মারেনি একবারও। ধোঁয়া ধোঁয়া কুয়াশায় ছেয়ে থাকা চারপাশ। মারাত্মক দাঁত বসানো ঠাণ্ডার কামড়ানিটা কমেনি এতটুকু। মাথার ওপর সূর্যের তাপ না থাকলেও ঠাণ্ডায় প্রচণ্ড ব্যথা গোটা শরীর জুড়ে। মাঝখানে একবার ঘন্টাখানেকের বিশ্রাম। তারপর থেকে একটানা হাঁটছে। পায়ের গোছদুটো ছিঁড়ে পড়ছে একেবারে। হাতঘড়িতে টাইম দেখল অভিরূপ। মার্চিং লাইনের সামনে থেকে পিছিয়ে এলো অবিনাশ। লাইনের মাঝখানে অভিরূপ। খানিকটা দুরে একটা পাহাড়ের দিকে আঙুল তুলে দেখালো অবিনাশ। “ওই যে দেখছেন তিনটে চূড়া। এখানকার মানুষের তিনিপাহাড় নামে ডাকে ওটাকে। ওর পেছনেই জঙ্গল। আমাদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি এলাকা। কমপ্লিট লিবারেটেড জোন। ওখান থেকেই সেফ প্যাসেজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে আপনার। সোজা বিরসা মুন্ডা এয়ারপোর্ট। তারপর …।”
“কমরেড, আমার কাছে খবর আছে ওই জঙ্গলেরই গভীরে কোথাও অল ইন্ডিয়া কনফারেন্স হচ্ছে আপনাদের। শুনেছি সব রাজ্য থেকে ডেলিগেটসরা আসবেন ওই সম্মেলনে। আমি কি যেতে পারিনা ওখানে?” তীব্র আকুতি অভিরূপের চোখে। “হয়তো আরও অনেক নতুন তথ্য জানতে পারবো সেখানে … বড়জোর দুতিনতে দিন দেরী হবে ফিরতে …।”
“সরি কমরেড।” স্থির একচোখে ওর দিকে তাকালো অবিনাশ – “আজ অবধি কোন জার্নালিস্ট বা পার্টির বাইরের কাউকে এধরনের কনফারেন্সে উপস্থিত থাকতে পারমিশন দেয়া হয়নি। তাছাড়া আমাদের পার্টিতে সবকিছু একটা স্ট্রিক্ট ডিসিপ্লিনের মধ্যে দিয়ে চলে। কোথায়, কখন, কার জন্য কতটুকু সময় বাঁধা, ঠিক করা থাকে আগে থেকেই। তাই আপনার রিকোয়েস্ট রাখতে না পারার জন্য দুঃখিত।” কথা বলতে বলতে দৃষ্টিহীন চোখটা হঠাৎই ঘুরে গেল বাঁদিকে। ‘শ শ শ!’ ঠোঁটের কাছে আঙুল এনে চুপ করতে বললো অবিনাশ। দু-এক সেকেন্ডের নিস্তব্ধতা। তারপরই পাহাড় জঙ্গল কাঁপিয়ে চীৎকার – “ভাগোওওও! দওড়ো সব জঙ্গল কে তরফ … রেইড মারা হায় কুত্তালোগ!” কথা শেষ হবার আগেই ‘ফট ফট’ কালিপটকা ফাটার মতো আওয়াজ দুতিনটে। লাইনে অভিরূপের দুতিনজন আগে একটা আদিবাসী ছেলে। বেঁটেখাটো চেহারা। ঘুরে মুখ থুবড়ে পড়লো লাট খাওয়া ঘুড়ির মতো। কাপের ঢাকনার মতো উল্টে যাওয়া মাথার খুলি। ছিটকে ছড়িয়ে পড়া ঘিলু পাথরের গায়। হঠাৎ এরকম একটা ঘটনার অভিঘাতে হতভম্ব অভিরূপ। দাঁড়িয়ে পড়েছে। কাঁপছে থরথর করে। কিংকর্তব্যবিমুঢ়। ততক্ষণে এদিক থেকেও শুরু হয়ে গেছে গুলিবৃষ্টি। ‘তা তা তা’ একটানা অটোম্যাটিক ওয়েপনের তুতলে চলা শব্দ। আশপাশ দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বুলেট, বৃষ্টির মতো ছুটে এসে বিঁধে যাচ্ছে গাছের গায়। ছিটকে উঠছে পাথরে লেগে। এক ধুন্ধুমার মরণপণ এনকাউন্টার। মাঝখানে দাঁড়ানো অভিরূপ। চলৎশক্তিরহিত। হঠাৎই কাঁধে লোহার মত পাঞ্জার তীব্র ঝাঁকুনি। অবিনাশ! তীব্র ধমক – “রান কমরেড! এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।” যেন বহুযুগের ঘোর কাটিয়ে জেগে উঠলো অভিরূপ। দৌড়াতে শুরু করলো সম্বিত ফিরে পেয়ে। দৌড়োতে দৌড়োতেই খেয়াল করছিল, যে দিক থেকে গুলি ছুটে আসছে তার উল্টোদিকে অভিরূপকে শরীর দিয়ে আড়াল করে দৌড়োচ্ছে অবিনাশ। বেশ বুঝতে পারছিল গুলি এসে লাগলে আগে অবিনাশের গায়েই লাগবে। অভিরূপকে শরীর দিয়ে আগলে দৌড়োতে দৌড়োতেই হাতটা ঢুকে গেল বেল্টের গায়ে আটকানো একটা চামড়ার খাপে। বেড়িয়ে এলো গোলাকার লোহার বলের মত একটা কিছু। আকারে অনেকটা বেদানার মতো। দাঁত দিয়ে পিন ছিঁড়ে নিয়েই ছুঁড়ে দিলো উল্টোদিক থেকে ছুটে আসা গুলির উৎস লক্ষ্য করে। ‘ঘ্যাড়আআম!’ ভয়াবহ গর্জনে ধরিত্রী ফেটে দুভাগ হয়ে গেল যেন। আকাশে লাফ দিয়ে ওঠা আগুন আর ধোঁয়ার কুণ্ডলী। শূন্যে ছিটকে ওঠা দু-তিনটে দেহ। ভেসে আসা তীব্র আর্তনাদ। পরমুহূর্তেই ধোঁয়ার কুণ্ডলী ভেদ করে ছুটে আসা একটা উল্কাপিণ্ড যেন। তিরবেগে এসে আছড়ে পড়ল হাত দশেক সামনে। পায়ের তলায় ভুমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠা মেদিনী।
আগামী পর্বে সমাপ্য…
গত পর্বের লিঙ্ক –
https://banglalive.com/ketjel-pakhi-the-bird-with-the-fiery-wings-bengali-novel-20/
2 Responses
সেই একই রকম ধোঁয়ার গন্ধ আর বুলেটের শব্দ, যেমন দ্রোহজ – ১ এ আপনি দেখিয়েছেন, শুনিয়েছেন আর শুঁকিয়েছেন। সেই একই রকম পালানোর দৃশ্য। এই লেখার তৃতীয় পড়বে যেন দুই বন্ধুর আরেকবার দেখা হয় — আর একরকম ছুটে পালাবার দৃশ্য যেন থাকে সেখানে… সমাজ, সমাজের সমস্ত নিয়ম থেকে — এক স্বপ্নের দিকে।
অসম্ভব ভালো লাগছে পড়তে । টান টান উত্তেজনা প্রতি মুহূর্তে । Adventures series দেখছি। একটা কথা না বললেই নয়, সেটা লেখকের এই উপন্যাসটি থেকে অনেক বাস্তব তথ্য জানতে পারছি।